আনলিমিটেড ডেস্ক নিউজঃ গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলি আগ্রাসনকে সমর্থন করায় ‘সন্ত্রাসবাদ এবং মানবাধিকার লঙ্ঘনে’ জড়িত থাকার অভিযোগে যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্যের কয়েকজন ব্যক্তি এবং সংস্থার ওপর বেশ কয়েকটি নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে ইরান। খবর বার্তা সংস্থা এএফপি’র।
বৃহস্পতিবার জারি করা এক বিবৃতিতে ইরান পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বলেছে যে, মার্কিন ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের ওপর ইরানের নিষেধাজ্ঞা আরোপ ‘মানবাধিকার লঙ্ঘন এবং এই অঞ্চলে (গাজা) যুক্তরাষ্ট্রের সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড প্রতিরোধ’ আইনের সঙ্গে সংগতিপূর্ণ।
ইরানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকায় ফিলিস্তিনি জনগণের বিরুদ্ধে ইসরায়েলের ‘সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড’ এবং ‘গুরুতর মানবাধিকার লঙ্ঘনে’ মার্কিন সমর্থন ও অর্থায়নের কথা উল্লেখ করেছে।
ইরানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় আরো বলেছে, এ নিষেধাজ্ঞার ফলে ইরানের আর্থিক ও ব্যাংকিং ব্যবস্থায় এসব প্রতিষ্ঠান ও ব্যক্তি কোনো লেনদেন করতে পারবেন না। ইরানে তাদের সব সম্পদে নিষেধাজ্ঞা থাকবে। এছাড়া ইরানের কোনো অঞ্চলে তারা প্রবেশ করতে পারবেন না।
বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ‘ইসলামি প্রজাতন্ত্র ইরান সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে এবং সন্ত্রাসবাদে অর্থায়ন, বিশেষ করে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র কর্তৃক সংঘটিত সন্ত্রাসবাদ মোকাবিলায় তার মানবাধিকারের দায়বদ্ধতা এবং বাধ্যবাধকতার সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে উক্ত ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে।’
হামাসের হামলার পর গত বছরের ৭ অক্টোবর থেকে গাজায় ইসরায়েলি হত্যাযজ্ঞে এ পর্যন্ত অন্তত ৩৪ হাজার ৬০০ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন, যাদের অধিকাংশই শিশু ও নারী। অঞ্চলটি বর্তমানে স্মরণকালের অন্যতম ভয়াবহ মানবিক সংকটের সম্মুখীন।
ইরানের নিষেধাজ্ঞার অধীনে মার্কিন প্রতিষ্ঠানের মধ্যে রয়েছে ইসরায়েলকে অস্ত্র সরবরাহে জড়িত থাকার অভিযোগে লকহিড মার্টিন কর্পোরেশন, ইসরায়েলকে ১৫৫ মিলিমিটার বুলেট সরবরাহ করার অভিযোগে জেনারেল ডাইনামিকস, তেল আবিবকে ড্রোন সরবরাহ করার দায়ে স্কাইডিও ইঞ্জিনিয়ারিং কোম্পানি।
তালিকায় পূর্ব ভূমধ্যসাগরে গ্যাস কূপ শোষণে ইসরায়েলকে সহায়তা করার জন্য শেভরন করপোরেশন এবং মার্কিন ট্রেজারি বিভাগ দ্বারা হামাসকে নিষেধাজ্ঞা দেওয়ার ক্ষেত্রে ভূমিকার জন্য খারন কোম্পানি অন্তর্ভুক্ত রয়েছে।
নিষেধাজ্ঞার আওতায় থাকা যুক্তরাষ্ট্রের ব্যক্তিদের মধ্যে রয়েছেন, প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প এবং ট্রাম্প সংস্থার প্রধান আইনি কর্মকর্তা জেসন গ্রিনব্ল্যাট, আমেরিকান এন্টারপ্রাইজ ইনস্টিটিউটের সিনিয়র ফেলো মাইকেল রুবিন, ইউনাইটেড অ্যাগেইনস্ট নিউক্লিয়ার ইরান (ইউএএনআই) এর নীতি পরিচালক জেসন ব্রডস্কি, এফডিডির প্রতিষ্ঠাতা ও সভাপতি ক্লিফোর্ড ডি. মে, মার্কিন জেনারেল এবং ইউএস স্পেশাল অপারেশন কমান্ডের ১৩তম কমান্ডার ব্রায়ান পি. ফেন্টন, ইউএস নেভাল ফোর্সেস সেন্ট্রাল কমান্ডের কমান্ডার ব্র্যাড কুপার এবং আরটিএক্স করপোরেশনের সিইও গ্রেগরি জে. হেইস।
যুক্তরাজ্যের যেসব কর্মকর্তার বিরুদ্ধে ইরান নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে, তাদের মধ্যে রয়েছেন প্রতিরক্ষামন্ত্রী গ্র্যান্ট শ্যাপস, ব্রিটিশ আর্মি স্ট্র্যাটেজিক কমান্ডের কমান্ডার জেমস হকেনহাল। এর বাইরে লোহিত সাগরে যুক্তরাজ্যের নৌবাহিনীর বিরুদ্ধেও নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে তেহরান। যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিষ্ঠান হিসেবে লকহিড মার্টিন, শেভরনকেও নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়েছে। যুক্তরাজ্যের প্রতিষ্ঠান হিসেবে নিষেধাজ্ঞার আওতায় পড়েছে এলবেইট সিস্টেমস, পার্কার মেগিট ও রাফায়েল ইউকে।
Leave a Reply