আনলিমিটেড জেলা ডেস্কঃ দীর্ঘ ২৬ বছর আইনি লড়াই শেষে যশোরের চৌগাছার সৈয়দপুর গ্রামের আজিজুর রহমান হত্যা মামলার ৩১ আসামি খালাস পেয়েছে। এ মামলার অপর ৫ আসামি মামলা চলাকালীন মৃত্যুবরণ করায় তাদের আগেই অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে। রাষ্ট্রপক্ষ সাক্ষীদের মাধ্যমে আসামিদের বিরুদ্ধে হত্যার অভিযোগ প্রমাণ করতে ব্যর্থ হওয়ায় তারা খালাস পেয়েছেন।
সোমবার স্পেশাল জজ (জেলা ও দায়রা জজ) আদালতের বিচারক মোহাম্মদ সামছুল হক এক রায়ে এ আদেশ দিয়েছেন। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন আসামি পক্ষের আইনজীবী ব্যারিস্টার কাজী রেফাত রেজওয়ান সেতু।
খালাস পাওয়া আসামিরা হলেন- সৈয়দপুর গ্রামের কাজেম আলীর পাঁচ ছেলে বাবুল আক্তার বাবু, মফিজুর, হারুন-অর-রশীদ, শহিদুল ইসলাম ও হাফিজুর, আব্দুল আজিজের ছেলে জামাল উদ্দিন, হযরত আলীর ছেলে মধু, ইসমাইল সরদারের ছেলে গোলাম সরদার, আছির উদ্দিনের দুই ছেলে সিরাজ ও সহিদুল ইসলাম, মৃত অহেদ আলীর দুই ছেলে আবেদ আলী ও আব্দুর রউফ, বাবর আলী মন্ডলের ছেলে রেজাউল, মৃত আবেদ আলীর ছেলে শহিদুল, সৈয়দ আলীর ছেলে নুর ইসলাম, মৃত মহর আলীর ছেলে মুরাদ, বাহার আলীর তিন ছেলে আব্দুস সালাম, আব্দুল মালেক ও আব্দুল মান্নান, ওমর আলীর দুই ছেলে আসাদুল ও মগরব, মৃত ছমির আলীর দুই ছেলে মশিয়ার ও মতিয়ার, আকবার কাহারের দুই ছেলে সিরাজুল ও নজরুল ওরফে নজু, হামেদ আলীর ছেলে আইয়ুব, হোসেন বিশ্বাসের ছেলে কলিম, মৃত মহর আলীর ছেলে ইসা, গহর আলী বিশ্বাসের ছেলে তোরাপ, বাবর আলীর ছেলে নিজা এবং কোটালিপুর গ্রামের কাঠি বিশ্বাসের ছেলে হোসেন আলী।
জানা গেছে, চৌগাছার সৈয়দপুর গ্রামের আক্কাস আলী সরদারের সাথে জমি নিয়ে বিরোধ চলছিল একই গ্রামের কাজেম আলী মন্ডলের সাথে। ১৯৯৮ সালের ১৫ অক্টোবর বিকেলে কাজেম আলী মন্ডলের নেতৃত্বে অর্ধশতাধিক লোক দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে আক্কাস আলী মন্ডলের বাড়িতে হামলা করে। এ সময় হামলাকারীরা আক্কাস আলীর বাড়ি ভাংচুর, লুটপাট করে। এমরধ্যে আক্কাস আলী ছেলে আজিজুর বাড়ি থেকে ধরে পাশের ফাঁকা জায়গায় নিয়ে কাজেম আলীর ছেলে বাবুল আক্তার বাবুর নেতৃত্বে ছুরিকাঘাতে হত্যা করা হয়।
এ ঘটনায় নিহতের ভাই মিজানুর রহমান বাদী হয়ে ওই রাতে ৩৫ জনের নাম উল্লেখ করে চৌগাছা থানায় একটি হত্যা মামলা করেন। এ মামলার তদন্ত শেষে এজহার নামীয় ৩৫ জনসহ ৩৬ জনকে অভিযুক্ত করে ১৯৯৯ সালের ৫ জুন আদালতে চার্জশিজ জমা দেন তদন্তকারী কর্মকতা এসআই গিয়াস উদ্দিন। ঘটনার সাথে জড়িত থাকার অভিযোগ না পাওয়ায় বাঘারপাড়ার যাদবপুর গ্রামের আল মামুনের অব্যাহতির আবেদন করা হয়।
পরবর্তীতে মামলাটি বিচারের জন্য বদলি করা হলে ২০০৪ সালের ২৭ এপ্রিল চার্জশিটভুক্ত ৩৬ আসামিকে অভিযুক্ত করে চার্জ গঠন করে সাক্ষী গ্রহণের দিন ধার্য করেন। দীর্ঘ সাক্ষী গ্রহণ শেষে রাষ্ট্রপক্ষ সাক্ষীদের বক্তব্যে আসামিদের বিরুদ্ধে হত্যার অভিযোগ প্রমাণ করতে ব্যর্থ হওয়ায় বিচারক ওই ৩১ আসামিকে খালাস দিয়েছেন বিচারক। মামলার বিচারক কাজ চলাকালে আসামি কাজেল আলী মন্ডল, ইসহাক, মাসুদ, মসলেম ও অহেদ আলীর মৃত্যু হওয়ায় আগেই তাদের খালাস দেওয়া হয়েছে।
Leave a Reply