আনলিমিটেড আন্তর্জাতিক ডেস্কঃ হামাসের রাজনৈতিক শাখার প্রধান ইসমাইল হানিয়া হত্যার জন্য ইসরায়েলকে দায়ী করেছে মধ্যপ্রাচ্যসহ বিশ্বের বেশির ভাগ দেশ। এ হত্যাকাণ্ডের প্রতিশোধমূলক হামলা চালানোর জন্য প্রস্তুত রয়েছে ইরান। কিন্তু গাজা শান্তি আলোচনায় অগ্রগতির বিনিময়ে তেহরান পিছু হটতে পারে। জেদ্দায় এক জরুরি শীর্ষ সম্মেলনে জড়ো হওয়া আঞ্চলিক নেতারা এ কথা জানান। খবর সিএনএন ও আলজাজিরার
গাজায় যে কোনো মুহূর্তে ইসরায়েলের ভয়ঙ্কর ক্ষেপণাস্ত্র হামলা হতে পারে– এমন আশঙ্কায় ইরান ও তার প্রতিবেশী দেশজুড়ে বিমানের সব ফ্লাইট বাতিল করা হয়। হানিয়া হত্যার শোধ নিতে ইসরায়েলে হামলা চালাতে পারে ইরান, যা মধ্যপ্রাচ্যে একটি সর্বাত্মক যুদ্ধের সূত্রপাত ঘটাতে পারে। এ নিয়ে জরুরি বৈঠকের আয়োজন করে অর্গানাইজেশন অব ইসলামিক কো-অপারেশন (ওআইসি)। সেখানে বৈঠকে ইরানের ভারপ্রাপ্ত পররাষ্ট্রমন্ত্রী আলী বাঘেরি তাঁর একজন সহযোগীকে জানান, তাঁর দেশ একটি আঞ্চলিক যুদ্ধ শুরু করার দ্বারপ্রান্তে। ক্যামেরুনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী বাঘেরির ডানদিকে, ইয়েমেনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী তাঁর বাঁ পাশে বসেছিলেন। তাঁর এ বার্তা তাদের কানেও পৌঁছায়। মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ দেশগুলোর পররাষ্ট্রমন্ত্রীরা এ পরিস্থিতিকে একটি বিস্তৃত সংঘাতে রূপান্তরিত হওয়া থেকে রক্ষা করার জন্যই এ জরুরি বৈঠকের আয়োজন করেন। সেখান থেকেই শর্ত সাপেক্ষে ইসরায়েলে হামলা না চালানোর বার্তা পাওয়া যায় ইরানের তরফ থেকে।
এদিকে গাজায় যুদ্ধবিরতি ও জিম্মি মুক্তি চুক্তি চূড়ান্ত করতে আগামী ১৫ অগাস্ট জরুরি আলোচনায় বসার জন্য ইসরায়েল ও হামাসকে আহ্বান জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র, মিসর ও কাতার। ইসরায়েল ও হামাসের মধ্যে চুক্তির জন্য মধ্যস্থতার চেষ্টা করছে এই তিন দেশ। বৃহস্পতিবার এক যৌথ বিবৃতিতে দেশগুলো ওই আহ্বান জানিয়েছে।
কাতারের রাজধানী দোহা কিংবা মিসরের রাজধানী কায়রোতে এ আলোচনা হতে পারে বলে জানানো হয়েছে বিবৃতিতে।
তিন দেশ বিবৃতিতে আরও বলেছে, চুক্তির একটি রূপরেখা এখন আলোচনার টেবিলে আছে। এর বাস্তবায়ন সংক্রান্ত বিষয়গুলোর বিস্তারিত নির্ধারণ শুধু বাকি আছে। নষ্ট করার মতো সময় নেই। কিংবা আরও বিলম্ব করার জন্যও কোনো দলের পক্ষ থেকে অজুহাত দেওয়ার নেই। এখন জিম্মিদের মুক্ত করার সময়, যুদ্ধবিরতি শুরু করার সময় এবং চুক্তি বাস্তবায়নের সময়। নেতারা অমীমাংসিত কিছু বিষয়ের সমাধান করার জন্য চূড়ান্ত একটি সংযোজনমূলক প্রস্তাব উপস্থাপনের প্রস্তাবও করেছেন।
ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু বলেছেন, ইসরায়েলের আলোচকরা সেখানে থাকবেন। তাদের লক্ষ্য হলো, চুক্তির বিস্তারিত রূপরেখা চূড়ান্ত করা ও তা বাস্তবায়ন করা। তবে ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী গোষ্ঠী হামাস এ বিষয়ে তাৎক্ষণিক কোনো প্রতিক্রিয়া জানায়নি।
অন্যদিকে ইসরায়েলি হামলায় পালাতে বাধ্য হওয়ার মাত্র দুই সপ্তাহ পর পূর্ব খান ইউনিস থেকে হাজার হাজার ফিলিস্তিনি আবার বাস্তুচ্যুত হয়েছে। দক্ষিণ গাজার শহরের কাছে আল-মাওয়াসি ‘নিরাপদ অঞ্চলে’ বোমা হামলা করেছে ইসরায়েল। এতে ২২ জন নিহত হয়েছে। আহত হয়েছে বহু মানুষ।
Leave a Reply