ডেস্ক নিউজঃ ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন আগারগাঁও এলাকার ২৮নং ওয়ার্ড কাউন্সিল ফোরকান হোসেন ও তার ভাইদের চাঁদাবাজি,সন্ত্রাসী কার্যক্রমে অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছে এলাকাবাসী।
অভিযোগ আছে,কাউন্সিল ফোরকান হোসেন, সিরাজুল, আসাদুজ্জামান আসাদ তারা তিন মিলে ২৮নং ওয়ার্ড পুরো এলাকা নিয়ন্ত্রণ করে। চাঁদা তুলা ও সন্ত্রাসী কার্যক্রম পরিচালনা করার জন্য কিশোর গ্যাং থেকে শুরু করে তাদের রয়েছে নিজস্ব বাহিনী। মাদক, ছিনতাই, চাঁদাবাজি,ভমি দখল মত সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড করানো হয় কিশোর গ্যাংদের দিয়ে। কিশোর গ্যাংয়ের গডফাদার আসাদ নিজেই। জয়নাল ও কালু নামে ব্যক্তি ফোরকানের ভাই আসাদের হয়ে বিএনপি বস্তি এলাকা নিয়ন্ত্রণ করে। সেখানে থেকে অবৈধ বিদ্যুৎ সংযোগের প্রতিমাসে লাখ লাখ টাকা আদায় করে। শহীদ সোহরাওয়ার্দী হাসপাতাল,পঙ্গু হাসপাতাল ও আশেপাশের হাসপাতালের
লাশবাহী অ্যাম্বুলেন্স থেকেও চাঁদা নেওয়া হয়। চাঁদা না দিলে প্রকাশ্যে গাড়ি মালিক ও ড্রাইভার উপরে হামলা করা হয়। আগারগাঁও এলাকার সব হাসপাতাল এ সিন্ডিকেটের হাতে জিম্মি হয়ে পড়েছে। বড় বড় সরকারি অফিস এ এলাকায় হওয়ায় এখন চক্রটি টেন্ডার বাণিজ্যও দখল নিতেও মরিয়া হয়ে উঠেছে। আসাদ শেরে বাংলা নগর থানার স্বেচ্ছাসেবক সভাপতি। কাউন্সিলর ভাইয়ের ক্ষমতা আর দলীয় প্রভাবে এতোটা বেপরোয়া যে তার সামনে কেউ প্রতিবাদ করতে সাহস পায়না।
কাউন্সিল ফোরকান হোসেন ও তার ছোট ভাই আসাদের বিরুদ্ধে অবৈধভাবে সরকারি রাস্তা দখল করে ভবন নির্মাণের অভিযোগও আছে।
স্থানীয় নেতাকর্মী ও এলাকাবাসী অভিযোগের ভিত্তিতে গত ২৮মার্চ দুদকের প্রধান কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক মো. সাইদুজ্জামান ও সহকারী পরিচালক ওমর ফারুকসহ ৮ সদস্যের একটি এনফোর্সমেন্ট টিম অভিযোগের ব্যাপারে যাচাই-বাছাই এর জন্য অভিযান পরিচালনা করে।
দুদক জানায়, ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের ২৮ নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর ফোরকান হোসেন ও তার ভাই মো. আসাদুজ্জামান আসাদের বিরুদ্ধে অবৈধভাবে সরকারি রাস্তা দখল করে বহুতল ভবন নির্মাণের অভিযোগের বিষয়ে অভিযান পরিচালনা করেছে দুদক। অভিযানকালে কাউন্সিলর ফোরকান হোসেন ঢাকার বাইরে থাকায় ঘটনাস্থলে উপস্থিত ছিলেন না। তবে তার ভাই আসাদুজ্জামান আসাদের বক্তব্য গ্রহণ করেছে দুদক টিম। এছাড়া ওই জায়গায় নির্মাণাধীন লায়ন বিল্ডার্স এবং আগারগাঁও কেন্দ্রীয় জামে মসজিদ সংলগ্ন সড়কের নকশা ও কাগজপত্র সংগ্রহ করা হয়েছে। রেকর্ডপত্র পর্যালোচনা করে বিস্তারিত প্রতিবেদন কমিশনের দাখিল করা হবে।
অন্যদিকে দুদকে আসা অভিযোগের বিষয়ে জানা যায়, রাজধানীর শেরেবাংলা নগরের কামাল সরণির (৬০ ফুট সড়ক) পশ্চিম আগারগাঁও কেন্দ্রীয় জামে মসজিদ সড়কের প্রায় ৭০০ বর্গফুট বন্ধ করে প্লট তৈরি করা হয়েছে। যে প্লটে ফ্ল্যাট বিক্রির জন্য ডেভেলপার কোম্পানি সাইন বোর্ডও দিয়েছে। অথচ সড়কটি বন্ধ হয়ে যাওয়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছে স্থানীয়রা।
এই অভিযান পরিচালনার অগ্রগতির সম্পর্কে জানতে চাইলে দুদকের সহকারী উপপরিচালক (জনসংযোগ) আরিফ সাদেক বলেন,অভিযোগের ব্যাপারে যাচাই-বাছাই করা হয়েছে। কাগজপত্র না দেখে এখন অভিযোগর যাচাই-বাছাই এর অগ্রগতি সম্পর্কে বলা যাচ্ছে না।
স্থানীয় বাসিন্দা ও নেতাকর্মীদের অভিযোগ,আসাদ কিশোর গ্যাংএকটি চক্র গড়ে তুলেছে। তাদের দাপটে দিন দিন ভয়ংকর হয়ে উঠছে এলাকা। তার দুইভাই সিরাজুল ইসলাম ও আসাদ অনেকটা প্রকাশ্যেই চাঁদাবাজি ও আন্ডারগ্রাউন্ড নিয়ন্ত্রণ করে। পুলিশের গাড়িতে বোমা হামলাকারীরাও এখন তাদের দলে। যখন যে দল ক্ষমতায় আসে সে দলের হয়ে বনে যান তারা। তাদের অত্যাচর থেকে বাদ যায়নি স্থানীয় নেতাকর্মীও। শেরে বাংলা নগর যুব মহিলা লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক তার স্বামীকে ও ২৮ নং ওয়ার্ড ছাত্রলীগের সভাপতিকে মারধর করা হয়।
শেরে বাংলা নগর যুব মহিলা লীগের সাংগঠনিক সম্পাদককের স্বামীকে মারধরের ঘটনায় ২০২১সালের ২৭ডিসেম্বরে আগারগাঁও থানায় একটি মামলা করেন( মামলা নং ৪২)।
এছাড়া খোঁজে নিয়ে আরো জানা গেছে, আসাদের কিশোর গ্যাং আবুল ঢালী নামে একজন গাড়ি চালকের টাকা ছিটিয়ে নিতে চেষ্টা করলে দিতে না চাওয়া তার হাতে কব্জি কেটে দেয়। ২০১৮ সালের ৩আগস্ট মামলা করা হলেও এখনো বিচারাধীন।
এমনকি ময়লার শ্রমিক ও ময়লার অপসারণের গাড়ি তালা মেরে জিম্মি করে লাখ টাকা দাবি করে। পরে কৌশলে করে বর্জ্য অপসারণ নিয়ন্ত্রণ হাতে নিয়েছে। এই নিয়ে ২০২১ সালের ২৮জুন শেরেবাংলা নগর থানায় জিডিও করা হয়। জিডি নং ১২১৪।
শেরে বাংলা নগর থানা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি আসাদুজ্জামান আসাদ বলেন, আগারগাঁও এলাকায় আমার কোনো কিশোর গ্যাং নেই। লিমন, সুজন, রুবেল, মনির হোসেন,এরা আপনার কিশোর গ্যাং সদস্য এর উত্তরে তিনি,এরা আমার সঙ্গে থাকে,এরা ছোট কিভাবে কিশোর গ্যাং হয়। যারাই এসব কথা বলছে মিথ্যা কথা বলছে। আমি কোনো চাঁদাবাজির সঙ্গে যুক্ত নয়। আমার নামে কোনো মামলা বা জিডি নয় হয়নি। আপনি এসে সাক্ষাৎকাতে বলেন এই বলে আসাদ ফোন কেটে দেন।
বিষয়ে কাউন্সিলর ফোরকান হোসেনের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, কোনো খারাপ কাজে আমি কখনো জড়িত না। সবসময় আামি এলাকার লোকজনের সেবা করে আসছি। এ এলাকা ছিলো মাদকের আকড়া আমি কাউন্সিলর হওয়ায় পরে মাদক বন্ধ করেছি। যারাই আমার নামে এসব কথা বলছে মিথ্যা কথা বলেছে। আপনি আসেন কথা বলি মোবাইলে সব কথা বলা সম্ভব না।
Leave a Reply