সম্পাদকীয় | তারিখঃ এপ্রিল ৬, ২০২০ | নিউজ টি পড়া হয়েছেঃ 3796 বার

জীবনের জন্য খাদ্য নাকি খাদ্যের জন্য মৃত্যু? এমন প্রশ্ন এখন এখন বাংলাদেশের সামনে! বিস্ময়কর হলেও সত্য করোনা ভাইরাস একটি ভয়ঙ্কর বিষ, যা মানুষ থেকে মানুষে ছড়াচ্ছে।
সারা বিশ্বে এটা মহামারিতে রূপ নিয়েছে। বাংলাদেশে এখন এটা ভয়ঙ্কর রূপ ধারণ করছে ধিরে ধিরে। মানুষের অসচেতনতাই যার প্রধান কারণ বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা। রাজধানীর বাসাবোতে এ পর্যন্ত করোনা ভাইরাসটি বিস্তারলাভ করে ফেললেও এখনো সর্তক হয়নি স্থানীয় অনেকেই। প্রশাসনও কঠোর অবস্থায় না গিয়ে সর্তকমূলক বার্তায় সীমাবদ্ধ রয়েছে। সেনাবাহিনীর টহল টিম নিয়মিত টহল অব্যাহত রাখলেও জমাট বেঁধে হাট বাজার করছে মানুষ জন। সরেজমিন ঘুরে দেখা যায়, ব্যবসায়িরা সবুজবাগ থানার নাকের ডগায় বৌ বাজার নামক স্থানে বাজার বসিয়ে জমজমাট ব্যবসা করছে। দেশের এই সংকটময় মুহূর্তে দল বেঁধে বাজার করলেও প্রশাসন বা দায়িত্বপ্রাপ্ত কারোই কোনো মনিটরিং নেই।
ব্যবসায়িরা কোনো ধরনের প্রতিকার ব্যবস্থা না নিয়েই পসরা সাজিয়ে বসে আছেন। হয়তো মানবিকতার কারণে প্রশাসন ব্যবস্থা নিতে পারছে না। তবে এখন কি মানবতা না জীবনের নিশ্চয়তা?
চা খেতে রাস্তায়, সিগারেট খেতে রাস্তায়, সেনাবাহিনী আসছে একটু দেখতে রাস্তায়, কত মানুষ বের হয়েছে দেখতে রাস্তায়, কম দামে বড় মাছ পাওয়া যাবে এ আশায় রাস্তায় আরো কত ইস্যুতে মানুষ রাস্তায় বের হচ্ছে যা সত্যি আমাদের লজ্জার।
অন্যদিকে অসহায় দরিদ্র একটি শ্রেণীর মানুষ পথের বাকে বাকে মোড়ে মোড়ে বসে আছে হয়তো কেউ এসে সাহায্য করবে এমন আশায়।
বাসাবোতে গতকাল থেকে লকডাউন ঘোষণা করা হলেও মানুষের ভেতর তেমন কোনো পরির্বতন লক্ষ্য করা যাচ্ছে না। এ কারণ বিশ্লেষনে দেখা যায়,
১/ ঘন বসতি এলাকা, একটি ঘরে অনেক মানুষের বাস!
২/ শিক্ষার বা সচেতনতার সঠিক অভাব!
৩/ দরিদ্র মানুষের সংখ্যা তুলনামূলক বেশি!
৪/ খাদ্য সংকটে প্রতিনিয়ত হিমসিম খেতে হচ্ছে অনেককে!
৫/ দায়িত্বভান কাউকে পাশে না পাওয়া!
৬/ প্রশাসনের কঠোর মনোভাব না থাকা!
বাসাবোতে ওয়ার্ড পরিক্রমা করলে যে চিত্রটি সামনে আসে,
১/ ৪নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর বিএনপির গোলাম হোসেন টানা প্রায় ১৭ বছর দায়িত্ব পালন করলেও এ বিপদে তার ব্যবহৃত নম্বরটি বন্ধ। চাইলেও কেউ তাকে পাচ্ছে না। সিটি করপোরেশনের বরাদ্দকৃত ত্রাণ কোনো মানুষ পেয়েছে বলে তথ্য নেই।
২/ নব-নির্বাচিত কাউন্সিলর জাহাঙ্গীর হোসেন। দায়িত্ব গ্রহণ না করলেও নিজ উদ্যোগে তেমন সাহায্য করছেন না তিনি। সামান্য কিছু কীটনাশক ওষধ দুদিন ছিটিয়েছে। অন্যদিকে, কেউ কোথায় ত্রাণ দিলে হাজির হচ্ছেন, নিজে দাঁড়িয়ে সে ত্রাণ বিতরন করছে।
৩/ মাসুদ হাসান শামীম দীর্ঘ দিন ধরে তিনি ৪নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতির দায়িত্ব পালন করে আসছে। ২০০১ পরবর্তি সময়ে বিরোধী দলের পথচলায় রাজনীতিতে যুক্ত হয়ে নেতাকর্মীদের কাছে দাতা হিসেবে গ্রহণযোগ্যতা অর্জন করে নেন। তবে এ দুর্যোগের সময় অসহায় নেতাকর্মীদের পাশেও তাকে পাওয়া যাচ্ছে না।
৪/ আলহাজ্ব গোলাম মোস্তফা যিনি বার্বি মোস্তফা হিসেবে পরিচিত। ব্যবসায়ি হিসেবে তার সুনাম ব্যাপক, মশা নিধনে গতবার ব্যাপক কাজ করলেও করোনা ইস্যুতে তিনি নিরব, আর তার নিরবতায় ব্যাপক সমালোচনা রয়েছে মানুষের।
লুৎফর রহমান, মনির হোসেনসহ অনেকেই আছেন এ তালিকায়। ভোটের বা ক্ষমতার রাজনীতি নয়। মানুষের কল্যাণে হোক রাজনীতি এমনটাই প্রত্যাশা সবার।
পাঁচ নং ওয়ার্ড পরিক্রমা-
৫নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর আশ্রাফুজ্জামান ফরিদ। যিনি কিছুটা কাজ করলেও যা তুলনামূলক অনেক কম। সিটি করপোরেশনের বরাদ্দকৃত ৫শ জনের খাদ্য সামগ্রী এখনো কেউ পেয়েছে এমন তথ্য পাওয়া যায়নি। তবে ছোট আকারে কিছু খাদ্য সামগ্রী বিতরন করেছেন তিনি। রাস্তায় কীটনাশক পানি ছিটানো হয়েছে।
৫নং ওয়ার্ডের নব-নির্বাচিত কাউন্সিলর লায়ন চিত্ত রঞ্জন দাস, যিনি একমাত্র নিজ উদ্যোগে মানবতার কল্যাণে, মানবতার ফেরিওয়ালা হিসেবে নিজেকে মানুষের কল্যানে নিবেদিত করেছে। খাদ্য সামগ্রী, অর্থ সহায়তা, সচেতনতাসহজ যথেষ্ট করার চেষ্টা করছেন তিনি। অনলাইনে সেবাও দিচ্ছেন তিনি।
আমি ব্যক্তিগতভাবে স্যালুট জানাই তাকে।
৫নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মাসুদ পারভেজ আকন্দ যিনি সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিয়েছেন, তথ্য পেলেই পৌঁছে দিচ্ছেন খাদ্য সামগ্রী অসহায় মানুষের দুয়ারে।
এদিকে, ৫নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি তানিয়া হোসেন মানুষের বা অসহায় নেতাকর্মীদের খোঁজ নেয়া তো দূরের কথা, দেশের বাহিরে অবস্থান করছেন এই বিপদে। ফোনেও কারো সাথে যোগাযোগ নেই, কারো জন্য কোনো সাহায্য নেই।
৭৩ নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর শফিক সাহেব কিছু সাহায্য করলেও তা পর্যাপ্ত নয়।
৭৪নং ওয়ার্ডে কাউন্সিলর আবুল কালাম আজাদ কিছু চেষ্টা করছেন মানুষের পাশে দাঁড়াতে তবে যা পর্যাপ্ত নয়।
৭৪নং ওয়ার্ডে নব-নির্বাচিত কাউন্সিলর আজিজুল হক’কে খুঁজে পাচ্ছেন না সাধারণ মানুষ।
Leave a Reply