আনলিমিটেড নিউজ :: বিএনপি দেওয়া ভিশন নিয়ে সংসদে সমালোচনা করলেন সাংসদ এম এম আউয়াল। নিচে তার দেয়া প্রেসবিজ্ঞপ্তি তুলে ধরা হলো।
মাননীয় স্পিকার
প্রস্তাবিত ২০১৭-১৮ অর্থবছরের বাজেটের উপর সাধারণ আলোচনার সুযোগ করে দেওয়ার জন্য আপনাকে ধন্যবাদ।
মাননীয় স্পিকার
বক্তব্যের শুরুতেই আমি স্মরণ করছি মহাশক্তিধর রাব্বুল আলামীনের প্রতি, যার তৌফিকে আমি আজকে মহান সংসদে দাঁড়িয়ে কথা বলার সুযোগ পাচ্ছি। দয়াময় আমাদের বাংলাদেশকে সুন্দর, শান্তিপূর্ণ রাষ্ট্রে পরিণত করে দিন। বক্তব্যের প্রারম্ভেই মনে করছি জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান, জাতীয় চারনেতা ও জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তান মুক্তিযোদ্ধাদের, যাদের প্রাণের বিনিময়ে আমরা পেয়েছি স্বদেশভূমি। যাদের প্রাণবিসর্জন দেওয়া সংগ্রাম না থাকলে হয়তো বাংলাদেশ নামে একটি দেশ পৃথিবীর বুকে লাল-সবুজের পরিচয় পেতো না।
মাননীয় স্পিকার
আমি স্মরণ করছি, আমার নির্বাচনি এলাকা লক্ষ্মীপুর-১ রামগঞ্জবাসীকে, যাদের সানুগ্রহ ভোটে আমি তাদের প্রতিনিধিত্ব করছি জাতীয় সংসদে। কৃতজ্ঞচিত্তে মনে করছি, আমার দল বাংলাদেশ তরিকত ফেডারেশনের আপামর নেতাকর্মীদের; সর্বপরি দলের চেয়ারম্যান, তরিকতজগতের কান্ডারি সৈয়দ নজিবুল বসর মাইজভান্ডারীকে। প্রস্তাবিত জাতীয় বাজেটের আলোচনার প্রাক্কালে আমি ধন্যবাদ জানাতে চাই, ‘উন্নয়নের বাংলাদেশ’এর রূপকার; জননেত্রী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে, যার সুদৃঢ়-সাহসী নেতৃত্বে শত প্রতিকূলতার মধ্য দিয়ে এগিয়ে চলেছে আমাদের স্বদেশমাতৃকা। যার কঠোর অধ্যবসালগ্ন নেতৃত্বে বাংলাদেশিরা বিশ্বের বুকে প্রতিদিন মাথা উঁচু করে চলেছে। ধন্যবাদ এই জাতীয় সংসদে প্রতিনিধিত্বশীল আমার সম্মানিত সহকর্মীদের।
মাননীয় স্পিকার
আগামী ২০১৯ সালেই একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন। আর এ কারণেই দিলখুলে প্রস্তাবিত বাজেটের সমালোচনা করে চলেছেন আমাদের বিরোধীবন্ধুরা। বাজেটের অংকের সমালোচনা হয়েছে একেবারে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সরকারের প্রথম বাজেট থেকেই। তখনকার খ্যাতনামা অর্থনীতিবিদ শওকত আলী দেশের প্রথম ৭৮৫ কোটি টাকার বাজেটকে গরীব মারার বাজেট হিসেবে আখ্যা দিয়েছিলেন। আর যখন এই আধুনিক বিশ্বের একটি দেশ হিসেবে বাংলাদেশের অর্থমন্ত্রী ৪ লাখ কোটি টাকার বাজেট দেন, তখনো রাজনৈতিক এবং অর্থনীতিতে প্রাজ্ঞ বন্ধুরা গরীব মারার বাজেট, বিশাল অংকের বাজেট, উচ্চাকাঙ্খী বাজেট হিসেবে সমালোচনা করেন। এই সমালোচনা চলছে, চলবে; কিন্তু দেশের উন্নয়ন থেমে থাকেনি।
মাননীয় স্পিকার
মাননীয় অর্থমন্ত্রীর প্রস্তাবিত ২০১৭-১৮ অর্থবছরের বাজেট নিঃসন্দেহে উচ্চাকাঙ্খী। স্বদেশ নিয়ে উচ্চাকাঙ্খা না থাকলে স্বপ্নের স্বদেশ গড়া যায় না। অর্থমন্ত্রী তার বক্তব্যের শুরুতেই আশা প্রকাশ করেছেন, ‘দিন এসেছে দল, মত, হিংসা-বিদ্বেষ ভুলে সকলে মিলে সামনে এগিয়ে চলার। আসুন, ২০৪১ সালের সমৃদ্ধ, উন্নত, সুখী ও শান্তিময় বাংলাদেশের জন্যে প্রস্তুতি নেই । সময় এসেছে সাহসী রাষ্ট্রনায়ক শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আলোর পথে অভিযাত্রার।’আমাদের এই অভিযাত্রা শুরু হয়েছে সেই ২০০৮ সালেই। জঙ্গিবাদী রাজনৈতিক গোষ্ঠী থেকে দেশ চালানোর ক্ষমতা যখন জনগণ মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার হাতে তুলে দিয়েছেন।
মাননীয় স্পিকার
আমাদের রাজনৈতিকবিরোধীবন্ধুরা অভিযোগ করেছেন, প্রস্তাবিত বাজেটে তারা ‘যুগপৎ বিস্মিত, ক্ষুব্ধ এবং হতাশ এবং অতীত অভিজ্ঞতার আলোকে এই বাজেট বাস্তবায়নযোগ্য নয়। কেবলমাত্র অলীক স্বপ্ন-কল্পনাই এই প্রস্তাবিত বাজেটের ভিত্তি।’’ বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর যখন গুলশানের চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে বাজেট নিয়ে এমন মন্তব্য করেন, তা শুনে আমাদেরও বিস্মিত হতে হয়, ভেবে, যে মাত্র কদিন আগে আপনার দলের প্রধানের দেওয়া ভিশন ২০৩০’এর অনেক প্রস্তাবই এই সরকার বাস্তবায়ন করে ফেলেছে।
মাননীয় স্পিকার
ভিশন ২০৩০ এ মুক্তিযোদ্ধাদের সুযোগ-সুবিধা বাড়ানোর কথা যখন প্রস্তাবে পড়ছিলেন খালেদা জিয়া, তখনই রাজধানীর একটি অনুষ্ঠানে আমাদের দায়িত্বশীল মন্ত্রী জানান, আমাদের সরকার ইতোমধ্যেই মুক্তিযোদ্ধাদের বাড়ি দেওয়া শুরু করেছে। পর্যায়ক্রমে সব মুক্তিযোদ্ধারাই পাবেন। তারা যখন ঘোষণা দেয়, ক্ষমতায় গেলে ৫৭ ধারা বাতিল করা হবে, তারও আগে আমাদের সরকার এই ধারা বাতিল করে ডিজিটাল সিকিউরিটি ধারা তৈরি করার উদ্যোগ গ্রহণ করে ফেলে। বিএনপির মহাসচিব জানিয়েছেন, কেবলমাত্র অলীক স্বপ্ন-কল্পনাই প্রস্তাবিত বাজেটের ভিত্তি।
মাননীয় স্পিকার, বাংলাদেশের বহুবছরের আকাঙ্খার পদ্মা সেতু মাথা উঁচু করে দাঁড়াচ্ছে, এই সময় তাদের এমন উক্তি, তাদেরকে হাস্যকর বানায়। এই পদ্মা সেতুও খালেদা জিয়া তার জীবদ্দশায় দেখে যেতে পারবেন না বলে একাধিক অনুষ্ঠানে বলেছিলেন। মাননীয় স্পিকার, আমি মহান রাব্বুল আলামীনের কাছে সবিনয় প্রার্থনা করব, স্বপ্নের এই সেতু যেন তিনি নিজ চোখে দেখে পদ্মা পাড়ি দিতে পারেন।
মাননীয় স্পিকার
আমি প্রস্তাবিত বাজেটের কয়েকটি বিষয় নিয়ে খুব স্বল্পসময়ে একটি পর্যবেক্ষণ দেব। ২০১৬-১৭ অর্থবছরের অনুন্নয়ন খাত ও উন্নয়ন খাতের বরাদ্দ বিশ্লেষণ করলে দেখা যায় যে সংশোধিত বাজেটের অনুন্নয়ন ব্যয় জিডিপির ৯.১% এবং উন্নয়ন ব্যয় জিডিপির ৫.৯%। অর্থাৎ জিডিপির অংশ হিসেবে উন্নয়ন ব্যয় অনুন্নয়ন ব্যয়ের তুলনায় ৩.২% কম। একটি উন্নয়নশীল দেশ হিসেবে অনুন্নয়ন ব্যয় উন্নয়ন ব্যয়ের তুলনায় বেশি হওয়ায় খানিকটা খটকা লাগে। এ বিষয়টি সংশোধিত বাজেটে কমিয়ে রাখার প্রস্তাব করছি।
প্রস্তাবিত বাজেটে মোট ঘাটতির পরিমাণ ১ লক্ষ ১২ হাজার ২ শত ৭৫ কোটি। এই ঘাটতি পূরণের জন্য বৈদেশিক সূত্র থেকে প্রাপ্তি ধরা হয়েছে ৫১ হাজার ৯ শত ২৪ কোটি টাকা। সংশোধিত ২০১৬-১৭ অর্থবছরের বাজেটে এর পরিমাণ ২৮ হাজার ৭ শত ৭৭ কোটি টাকা। সংশোধিত বাজেটের তুলনায় বৈদেশিক সূত্রের মাধ্যমে ঘাটতি পুরণে ৮০% বৃদ্ধি ধরা হয়েছে। পুরোপুরি বৈদেশিক সূত্র থেকে প্রাপ্ত এই অর্থ পাওয়া কতটা বাস্তবসম্মত?
বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে এসেছে, ২০১৫-১৬ সালে সর্বোচ্চ ২৭০ কোটি ডলার বৈদেশিক সাহায্য এসেছিল, আর প্রস্তাবিত বাজেটে সেটাকে ৭৬০ কোটি ডলার দেখানো হয়েছে যা ১৮১% বেশি, এই পরিমাণ অর্থ অর্জন কতটা সম্ভব?
মাননীয় স্পিকার
আশার কথা হচ্ছে, বিগত বিএনপি-জামায়াতের সরকারের সময় বিদেশনির্ভরতার বিষয়টি মাথায় রাখলে এই সরকারের সময়ে বিদেশনির্ভরতা বহুগুণ কমেছে। ১৯৮৫-৮৬ অর্থবছরে বিদেশনির্ভরতা ছিল ৩৬ শতাংশ। যেটি ক্রমবর্ধিত হয়ে ৯৩-৯৪ সালে এ গিয়ে ৬১ শতাংশে ঠেকে। জননেত্রী শেখ হাসিনার সরকার সেটি ২.৩৭ শতাংশে নামিয়ে এনেছেন। এটি উচ্চাকাঙ্খী বাজেট না হলে সম্ভব হত না। অনেকটা স্বপ্নের মত পরিবর্তন দেশের অর্থনীতিতে সংঘটিত হয়েছে।
মাননীয় স্পিকার
বিরোধীরাজনৈতিক বন্ধুরা নানা সমালোচনা করলেও জননেত্রীর সরকারকে দেশ গড়ার সঙ্গে সঙ্গে বহু চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করতে হয়েছে। মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে রাষ্ট্রীয়ভাবে বাস্তবায়ন, মানবতাবিরোধীদের বিচার, জঙ্গিবাদবিস্তাররোধ, এসডিজি অর্জনের মতো বিশাল চ্যালেঞ্জগুলো অর্জিত হয়েছে সাহসীনেত্রী শেখ হাসিনার সরকারের আমলেই।
মাননীয় স্পিকার
ইতোমধ্যে একটি আত্মসক্ষম জাতিরাষ্ট্র গঠিত হতে যা যা প্রয়োজন তা-ই এই অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবুল মুহিতের বাজেটগুলোয় প্রতিফলন ঘটেছে। এই বাজেটেও এর প্রতিফলন আছে, আগামী দিনেও তার বাজেটগুলোয় একটি স্বাপ্নিক বাংলাদেশ গড়ার সমস্ত বাস্তবানুগ রাস্তা থাকবে বলে প্রত্যাশা করছি।
মাননীয় স্পিকার
ইতোমধ্যেই মাননীয় অর্থমন্ত্রীর প্রস্তাবিত আবগারি করের বিষয়ে নানা সমালোচনা চলছে। আমিও বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনায় নিয়ে আবগারি শুল্ক প্রত্যাহারের জোর দাবি জানাই। আমাদের দেশের প্রধামন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা ইতোমধ্যেই বলেছেন, সাধারণ মানুষের সঙ্গে সাংঘর্ষিক কোনও কর, ভ্যাট ও শুল্ক রাখবেন না। জাতি তার কথায় আশ্বস্ত।
আমি প্রস্তাবিত বাজেটের ডিটেলিংয়ে না গিয়ে সরাসরি কিছু প্রস্তাব করছি। এর মধ্যে একটি হচ্ছে, স্বাস্থ্যসেবা ও শিক্ষা ও পরিকল্পনা বিভাগটি আমাদের মতো দেশের জন্য গুরুত্বপূর্ণ। আমাদের দেশের স্বাস্থসংশ্লিষ্ট অবকাঠামো উন্নয়ন থাকলেও কঠোর ব্যবস্থাপনার কারণে সেটি দিনদিন নানাভাবে সমালোচিত হচ্ছে। পাশ্ববর্তী ভারতেও সরকারি চিকিৎসার হাল খুব একটা ভালো না। কিন্তু মাননীয় স্পিকার, আমার সঙ্গে নানা সময় চিকিৎসকবন্ধুদের কথা হয়, তাদের ভাষ্য, অবকাঠামোগত উন্নয়ন অনেক দেশের চেয়ে খুব ভালো থাকলেও শুধুমাত্র দুর্নীতি ও ব্যবস্থাপনা বেঠিক হওয়ায় সরকারি চিকিসালয়গুলো পূর্ণ সুনাম অর্জন করতে পারছে না। বিভিন্ন হাসপাতালে কোটি কোটি টাকার মেশিনারিজগুলো পড়ে আছে। সংবাদপত্রে প্রকাশ, নতুন কেন্দ্রীয় কারাগারের মেশিনারিজগুলো সচল করা হচ্ছে না। এসব কারণ খতিয়ে দেখা হোক।
রিয়েল এস্টেট সেক্টরকে বাজেটে বরাদ্দের আবেদন করছি। এই শিল্পে যে ভ্যাট আরোপ করা হয়েছে তা কমানো না হলে দেশের ক্রমবর্ধমান এই শিল্পটি ধ্বংস হয়ে যাবে। এই শিল্পে ২৫০ ইন্ড্রাস্টি আছে। প্রায় ৩৫ লাখ শ্রমিক কোনও আন্দোলন, ভাংচুর, অবরোধহীনভাবে নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছেন। আমি ফ্ল্যাট ও প্লটের শুল্ক কমানো এবং রেজিস্ট্রেশন ফি করানোর জোর দাবি জানাচ্ছি। ইতোমধ্যে এই শিল্পে অনেক উদ্যোক্তা লোকসানের সম্মুখীন হয়েছেন এবং ভবিষ্যতে এটি বাড়বে।
মাননীয় স্পিকার
মাননীয় অর্থমন্ত্রী তার প্রস্তাবিত বাজেটে বলেছেন, ‘প্রবাস আয় আমাদের বৈদেশিক মুদ্রা আহরণের অন্যতম প্রধান উৎস। কিন্তু এই প্রধান একটি উৎসকে আরও শক্তিশালী ও আরও নিরঙ্কুশ করতে তাদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে। ইতোমধ্যে প্রবাসী আয়ে ঋণাত্বক প্রবৃদ্ধি দেখা দিয়েছে। আয় কমে যাওয়ার কারণগুলো খুঁজে বের করে এই খাতটিকে আরও মনোযোগী করে তুলতে হবে মাননীয় স্পিকার।
পরিকল্পিত নগরায়ন এখন দুঃস্বপ্নের মতো লাগে আমাদের কাছে। আমাদের রাজধানীতে আসার সবগুলো প্রবেশপথে নোংরা আবর্জনার ভাগাড়। অথচ আমাদের অর্থমন্ত্রী পরিকল্পিত নগরায়নের কথা বলেছেন বাজেটে। এই পরিকল্পনা বাজেটে থাকলেও বাস্তবে কোনও প্রভাব নেই। এক হাতিরঝিল ছাড়া পরিচ্ছন্ন কোনও প্রকল্প উদাহরণ হিসেবে আমাদের সামনে নেই।
মাননীয় স্পিকার
বাজেট বাস্তবায়নের পথে আমি তিনটি বাধাকে চিহ্নিত করতে চাই। ১. দুর্নীতি, ২. সক্ষম জনশক্তির অভাব, ৩. দুর্বল মনিটরিং। সরকারি কাজে দুর্নীতি বন্ধ করতে হলে কঠোর মনিটরিং প্রয়োজন। ইতোমধ্যে চালু হওয়া বড় প্রকল্পগুলো শেষ করা প্রয়োজন।
মাননীয় স্পিকার
অব্যাহতভাবে সরকারী প্রতিষ্ঠানে পরিচালন মুনাফার পরিমাণ হ্রাস পাচ্ছে। ২০১৭ সালের অর্থনৈতিক সমীক্ষা অনুযায়ী, গত অর্থবছরে (২০১৫-১৬) রাষ্ট্রায়ত্ত প্রতিষ্ঠানে ১১ হাজার ৫৩২ কোটি ২০ লাখ টাকার পরিচালন মুনাফা অর্জিত হলেও চলতি অর্থবছরে (২০১৬-১৭) তা হ্রাস পেয়ে ৮ হাজার ২১৪ কোটি ৮০ লাখ টাকায় নেমে এসেছে। প্রস্তাবিত ২০১৭-১৮ অর্থবছরের প্রাক্কলিত হিসেবেও পরিচালন মুনাফার পরিমাণ হ্রাস পেয়েছে। বছরটিতে সরকারী প্রতিষ্ঠানে মাত্র ৫২৬ কোটি ১৭ লাখ টাকার পরিচালন মুনাফা অর্জিত হবে বলে হিসাব করা হয়েছে। এক্ষেত্রে প্রবৃদ্ধির হার ঋণাত্মক (৭৪ দশমিক ৬৪ শতাংশ) পর্যায়ে। চলতি অর্থবছরে নিট মুনাফা হয়েছে ৬ হাজার ৬১৬ কোটি ৬৮ লাখ টাকা। এর মধ্যে ৭ হাজার ৩৩৪ কোটি টাকার নিট মুনাফা অর্জন করে সর্বোচ্চ মুনাফাধারী প্রতিষ্ঠানে উন্নীত হয়েছে বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম কর্পোরেশন (বিপিসি)। এক্ষেত্রে জ্বালানি তেলের দাম কমানো দরকার।
পাশাপাশি মাননীয় স্পিকার, চালের দাম বেড়েছে বিগত সময়ের চেয়ে কয়েকগুণ। ইতোমধ্যে আমাদের মাননীয় খাদ্যমন্ত্রী ঢাকার একটি অনুষ্ঠানে বলেছেন, চালের দাম বৃদ্ধির জন্য বিএনপিপন্থী ব্যবসায়ীরা দায়ী। আমার মনে হয়, মাননীয় স্পিকার, সরাসরি দায়িত্বশীল পদে থেকে এ ধরনের কথা না বলাটাই ভালো। এতে করে মূল্যবৃদ্ধির সঙ্গে জড়িত প্রকৃত হোতারা পার পেয়ে যায়। অপরাধীরা যে দলই করুক না কেন, চালের দাম বৃদ্ধির সঙ্গে যারাই জড়িত, তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণই হচ্ছে সুন্দর উপায়। বাংলাদেশের গণতন্ত্রের স্বপ্নদ্রষ্টা জননেত্রী শেখ হাসিনার সরকারের আমলে মানুষ না খেয়ে মরবে না, এটাই ছিল প্রতিশ্রুতি। এবং নেত্রী এটি বাস্তবায়ন করে দেখিয়েছেন। ফলে, চালের দাম কারা বাড়িয়েছে, এটা তদন্ত হোক।
পরিশেষে মাননীয় স্পিকার
চট্টগ্রামে পাহাড় ধসে মানুষের মৃত্যুর ঘটনায় আমি দুঃপ্রকাশ করছি। এবং পাহাড় ধসের কারণগুলো অনুসন্ধান করে শক্তভাবে প্রতিরোধ গড়ে তুলতে আমি সংশ্লিষ্ট সবার প্রতি আহ্বান জানাচ্ছি। পাশাপাশি আগামী পবিত্র ঈদুল ফিতরের অগ্রীম শুভেচ্ছা জানাচ্ছি।
Leave a Reply