আনলিমিটেড নিউজ ডেস্ক :: সেবা আর মানবতার অনন্য নজির স্থাপন করেলেন এক ইসরায়েলি নার্স। ফিলিস্তিনি ভূখণ্ডে দখলদারিত্ব বজায় রাখতে ইসরায়েলি বাহিনী যখন আগ্রাসন চালাচ্ছে, গুলি করে মানুষ হত্যা করে যাচ্ছে তখন এক ফিলিস্তিনি শিশুকে বাঁচাতে এগিয়ে এসেছেন ওলা অস্ত্রোস্কি জাক নামের এক নার্স। আহত অবস্থায় হাসপাতালে ভর্তি হওয়া ওই শিশুকে নিজের বুকের দুধ পান করিয়ে মাতৃত্বের বন্ধনে জড়িয়ে ফেলেন তিনি।ঘটনাটি গত ২ জুনের। আহত অবস্থায় জেরুজালেমের হাদাসাহ আইন কারিম মেডিক্যাল সেন্টারে ভর্তি করা হয় ইয়ামান নামের ৯ মাস বয়সী এক ফিলিস্তিনি শিশুকে। বাবা-মায়ের সঙ্গে গাড়িতে করে যাওয়ার সময় বাসের ধাক্কায় আহত হয় সে। দুর্ঘটনায় প্রাণ হারান ইয়ামানের বাবা, মা প্রাণে বেঁচে গেলেও গুরুতর আহত হয়ে মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়ছেন। এমন অবস্থায় হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার পর অনবরত কাঁদতে লাগলো মা-বাবাহীন শিশুটি। মায়ের বুকের দুধ পান করে অভ্যস্ত শিশুটিকে ফিডারে করে দুধ খাওয়ানো যাচ্ছিল না। এভাবে ক্ষুধার যন্ত্রণায় সাত ঘণ্টা কান্নাকাটি করলো সে। ইয়ামানের আত্মীয়রা ইসরায়েলি নার্স ওলা অস্ত্রোস্কি জাককে অনুরোধ করেন, শিশুটির সেবা করতে পারবে এমন কাউকে এনে দিতে।অস্ত্রোস্কির নিজেরও দেড় বছর বয়সী এক সন্তান রয়েছে। ইয়ামানকে বুকের দুধ পান করাতে এসময় তিনি নিজেই এগিয়ে আসেন। সংবাদমাধ্যম টুডেকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে অস্ত্রোস্কি জাক বলেন, ‘আমি মনে মনে ভাবলাম যেভাবেই হোক এ শিশুটিকে বাঁচাতে হবে। আমি ওর সঙ্গে কেমন যেন একটা অনন্য বন্ধন অনুভব করলাম। মনে হলো আমি আমার নিজের সন্তান আয়ামকে স্তন পান করাচ্ছি।’
এমনকি হাসপাতালের শিফট শেষ হওয়ার পরও ওই শিশুর দায়িত্ব ভোলেন না অস্ত্রোস্কি। ইয়ামানকে সাহায্য করতে পারবেন এমন মায়েদের খোঁজে ফেসবুকে পোস্ট দেন তিনি। অস্ত্রোস্কি জানান, তার ওই পোস্টে এক হাজারেরও বেশি লাইক পড়েছে এবং উত্তর এসেছে। অস্ত্রোস্কি বলেন, ‘মানব সংযোগ হলো খুব দৃঢ়।’
হাসপাতালে দুই দিন থাকার পর ইয়ামানকে ছেড়ে দেওয়া হলে অধিকৃত হেব্রনে পরিবারের কাছে ফিরে যায় সে। তার মায়ের অবস্থা এখনও গুরুতর হলেও স্থিতিশীল। সূত্র: মিডল ইস্ট মনিটর
Leave a Reply