আনলিমিটেড নিউজ: ঢাকা মহানগর পুলিশের ট্রাফিক বিভাগ কয়েকদিন আগে আশারবাণী শুনিয়ে ছিলেন রমজানে রাজধানীতে যানজট সহনীয় থাকবে। এ জন্য ট্রাফিক ব্যবস্থাপনার উন্নতিতে নানা কৌশল নির্ধারণ করা হয়েছিল। কিন্তু বাস্তবের সঙ্গে তার মিল খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। গতকাল রবিবার ছিল প্রথমদিন। যানজটে ভোগান্তি পোহাতে হয়েছে নগরবাসীকে। স্থবির রাস্তায় দীর্ঘ সময় যাত্রীদের যানবাহনে বসে থাকতে দেখা গেছে। তবে পুলিশের ট্রাফিক কর্মকর্তা যানজট বলতে নারাজ। তিনি বলেছেন, রমজানের প্রথম দিনে কয়েকটি সড়ক ও অলিগলিতে ছিল অতিরিক্ত যানবাহনের চাপ।
ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) অতিরিক্ত কমিশনার (ট্রাফিক) মোসলেউদ্দিন দাবি করেছেন যানজট নয়, যানবাহনের চাপ ছিল অলিগলিতে। প্রথম রমজান এ কারণে সড়কে যানবাহনের চাপ একটু বেশি ছিল। তা সত্ত্বেও আশাকরি নগরবাসী সময়মত বাসায় পৌঁছে স্বজনদের সঙ্গে ইফতার করতে পেরেছেন।
ট্রাফিক বিভাগের এ কর্মকর্তা বলেন, তিনি নিজে গতকাল দুপুরের পর থেকেই বিজয় সরণিতে ট্রাফিক ব্যবস্থা তদারকি করেছেন। দুই এক দিনের মধ্যেই অবস্থার উন্নতি হবে তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন।
অতিরিক্ত কমিশন মোসলেউদ্দিন আরো বলেন, রমজানে ও ঈদুল ফিতর সামনে রেখে মার্কেট ও বাস টার্মিনাল কেন্দ্রীক যানজট সহনীয় পর্যায়ে রাখতে ট্রাফিকের অতিরিক্ত সদস্য মোতায়েন করা হয়েছে। এছাড়া মহাখালী বাস টার্মিনাল ও আব্দুল্লাহপুর এলাকায় যানজট নিরসনে ঈদের আগে ও ঈদ পরবর্তী আরো এক সপ্তাহ ধরে চব্বিশ ঘন্টাব্যাপী দায়িত্ব পালন করবে ট্রাফিক পুলিশ।
ডিএমপি পশ্চিম বিভাগের উপ-কমিশনার (ট্রাফিক) লিটন কুমার সাহাও যানজট বলতে নারাজ। তার দাবি গাড়ির চাপ একটু বেশি ছিল। তা সত্ত্বে কোথাও দীর্ঘ সময় যেন যানবাহন দাঁড়িয়ে না থাকে সে জন্য ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। তিনি বলেন, মাঠে বিপুলসংখ্যক ট্রাফিক পুলিশ কাজ করছে। রোজাদার মানুষ যেন ভোগান্তিতে না পড়েন সে কারণে সার্বক্ষণিক ট্রাফিক ব্যবস্থাপনা মনিটরিং করা হচ্ছে। তিনি বলেন, বেশ কিছু সড়কের নাজুক অবস্থা ও খোঁড়াখুঁড়ি সত্ত্বেও আমরা যানজট নিয়ন্ত্রণে সর্বাধিক গুরুত্ব দিয়ে চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি।
বিভিন্ন সূত্রে প্রাপ্ত তথ্যে জানা যায়, গতকাল রবিবার সকাল থেকেই নগরীর মিরপুরের আগারগাঁও, প্রগতি সরণি, বনানী, মতিঝিল ও পুরান ঢাকার নবাবপুর, বাড্ডা, মালিবাগ, শাহবাগ, পল্টন, ফার্মগেট এলাকায় তীব্র যানজটের সৃষ্টি হয়। যানজটে বিশেষ করে বিপাকে পড়েন অফিসগামী মানুষ। মূল সড়ক ছেড়ে যানজট ছড়িয়ে পড়ে অলিগলিতে। তবে সর্বত্রই যান চলাচল স্বাভাবিক রাখার ক্ষেত্রে ট্রাফিক কর্মকর্তাদের তত্পরতা ছিল লক্ষ্যণীয়। মিরপুরের কালশী থেকে ঢাকা সেনানিবাসের ইসিবি চত্বর পর্যন্ত তীব্র যানজট দেখা গেছে। তবে ইসিবি চত্বর পেরিয়ে প্রয়াত রাষ্ট্রপতি জিল্লুর রহমান ফ্লাইওভার ফাঁকা ছিল। কুড়িল বিশ্বরোড এলাকায় বনানীমুখী সড়কে গাড়ির তীব্র চাপ দেখা গেছে। জিল্লুর রহমান ফ্লাইওভারের পূর্বমুখে গাড়ি চলাচলের কোনো ব্যবস্থা না থাকায় মিরপুর-গাবতলী-মোহাম্মদপুরগামী গাড়িগুলোও সড়কে আটকা পড়ে। এতে বিমানবন্দর এলাকা থেকে বনানীগামী সড়কে তীব্র যানজটের সৃষ্টি হয়।
ডিএমপির উত্তর ট্রাফিক বিভাগের সহকারী কমিশনার (বাড্ডা জোন) ফেরদৌসী রহমান জানান, প্রগতি সরণি জুড়ে সড়কের দুইপাশেই খোঁড়াখুঁড়ির কারণে রাস্তার প্রশস্ততা কমে গেছে। একই কথা জানান ট্রাফিক উত্তর বিভাগের উপ-কমিশনার প্রবীর কুমার রায়। তিনি বলেন, রাস্তা তো একটাই। একটি রাস্তায় সবাই এক সঙ্গে নামলে যানজট হবেই। তার উপর খোঁড়াখুঁড়ি। সবাই যদি নিয়ম মেনে চলে তবে যানজট থাকবে না।
পূর্ব বিভাগের উপ-কমিশনার (ট্রাফিক) মইনুল হাসান জানান, আমার এলাকায় পরিস্থিতি সকাল থেকেই ভালো রয়েছে। নিজে মাঠে থেকে তদারকি করছি। সকল এসিকে মাঠে থাকার নির্দেশনা দিয়েছি। রমজানে যেন যানজট এড়ানো যায়।
Sharing is caring!
Leave a Reply