আনলিমিটেড নিউজ বিশেষ :: আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে টাগের্ট করে বৃহৎ পরিকল্পনা নিয়েছে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ। তারই অংশ হিসেবে প্রচারণা নামছে দলটি।
প্রার্থী মনোনয়ন, অভ্যন্তরীণ কোন্দল মেটানো, জোট সম্প্রসারণসহ আগামী নির্বাচনের চূড়ান্ত প্রস্তুতির সার্বিক সিদ্ধান্ত গ্রহণ করতে আগামিকাল শনিবার সকাল সাড়ে ১০টায় আওয়ামী লীগের বর্ধিত সভা অনুষ্ঠিত হবে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরকারি বাসভবন গণভবনে এ সভার আয়োজন করা হয়েছে। আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে সভায় দলের কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সংসদ, উপদেষ্টা পরিষদ, জাতীয় পরিষদ সদস্যবৃন্দ, দলীয় মন্ত্রিপরিষদের সদস্য ও জাতীয় সংসদ সদস্যবৃন্দ, সকল জেলা ও মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি, সাধারণ সম্পাদক, দফতর ও উপ-দফতর সম্পাদক, প্রচার ও প্রকাশনা, উপ-প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক এবং তথ্য ও গবেষণা বিষয়ক সম্পাদকগণ উপস্থিত থাকবেন।
সূত্র জানায়, বিএনপিসহ সব দলের অংশগ্রহণে ব্যাপক প্রতিযোগিতামূলক নির্বাচন হবে এমনটা ধরে নিয়ে নির্বাচনী মাঠে জোরেশোরে নামতে চায় আওয়ামী লীগ। নির্বাচনী প্রস্তুতির অংশ হিসেবে তৃণমূলে তীক্ষ্ম নজর রাখছেন দলের হাইকমান্ড। অভ্যন্তরীণ কোন্দল মিটিয়ে উপযুক্ত প্রার্থী বাছাই করতে তৃণমূলের মতামত নিবেন শেখ হাসিনা। ইতোমধ্যে শেখ হাসিনা দলীয় ফোরামের কয়েকটি আলোচনায় স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছেন যে, জনপ্রিয় প্রার্থীদের মনোনয়ন দেওয়া হবে। জনবিচ্ছিন্ন কেউ আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পাবেন না।
এদিকে আজ শুক্রবার রাজধানীতে এক আলোচনা সভায় আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, শনিবার থেকে আগামী নির্বাচনের প্রস্তুতির সর্বাত্মক অগ্রযাত্রা শুরু করবে আওয়ামী লীগ।
জানা গেছে, আওয়ামী লীগের নেতৃত্বাধীন ১৪ দলীয় জোট সম্প্রসারণ করা হচ্ছে। ইতোমধ্যে, এ জোটের নেতাদের সঙ্গে ইসলামী ঐক্য ফ্রন্ট বাংলাদেশের আনুষ্ঠানিক আলোচনাও হয়েছে। দলটিকে জোটে শরিক করার জন্য লিখিতভাবে আবেদনও জানানো হয়েছে। এছাড়া আরো কয়েকটি দল ১৪ দলীয় জোটে যোগ দিতে চায়। কাদের জোটে নেওয়া হবে, আর কাদের নেওয়া হবে না সেই বিষয়টি চূড়ান্ত হবে আজকের বৈঠকে।
উল্লেখ্য, ২০০৪ সালের ২১ আগস্ট আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনার সমাবেশে গ্রেনেড হামলার পর ১৪ দল গঠনের উদ্যোগ শুরু হয়। নানামুখী চেষ্টার ফলে পরের বছর ২৩ দফা ঘোষণা সামনে রেখে বাম প্রগতিশীল জোট ১১ দল, আওয়ামী লীগ, জাসদ ও ন্যাপ মিলে ১৪ দল গঠিত হয়। পরে সিপিবি, বাসদসহ ১১ দলের চারটি দল বেরিয়ে যায়। ওয়ার্কার্স পার্টি, গণফোরাম, সাম্যবাদী দল, গণতন্ত্রী পার্টি, কমিউনিস্ট কেন্দ্র, গণআজাদী লীগ, গণতান্ত্রিক মজদুর পার্টি, বাসদ (একাংশ) এ আটটি দল ১৪ দলে থেকে যায়। ফলে সেই সময়ে ১৪ দল মূলত ১১ দলীয় জোটে পরিণত হয়। পরে গণফোরাম জোট থেকে বাদ পড়ে। এতে ১৪ দল ১০ দলীয় জোটে পরিণত হয়। দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনের জাতীয় পার্টি (জেপি) ও তরীকত ফেডারেশনকে জোটে নেওয়া হয়। বছরখানেক আগে জাসদ ভেঙে দুটি আলাদা জাসদ গঠিত হয়। দুই জাসদই বর্তমানে ১৪ দলে রয়েছে। ফলে জোটটিতে এখন ১৩টি দল রয়েছে। ইসলামী ঐক্য ফ্রন্ট বাংলাদেশকে নিলে ১৪ দলীয় জোট আসলেই ১৪ দলে পরিণত হবে।
সূত্রমতে, অনুপ্রবেশকারীদের বিরুদ্ধে কঠোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে এ সভায় বলে জানা গেছে। আওয়ামী লীগ সভানেত্রী ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দলীয় ফোরামের বিভিন্ন কর্মসূচিতে অনুপ্রবেশকারীদের দলে না নেওয়ার বিরুদ্ধে সতর্কও করে দিয়েছেন।
Leave a Reply