আনলিমিটেড নিউজ :: আপন জুয়েলার্সের মালিকরা সাময়িকভাবে জব্দকৃত আড়াইশ কোটি টাকা মূল্যমানের সাড়ে ১৩ মণ স্বর্ণের বৈধ কাগজপত্র দেখাতে পারেননি। শুল্ক গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ড. মইনুল খান এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
বনানীতে দুই বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীকে ধর্ষণের অভিযোগে মামলার পর আপন জুয়েলার্সের বিভিন্ন শাখায় অভিযান চালিয়ে ৪৯৭.৪০৮ কেজি স্বর্ণ ও ৪২৯ গ্রাম ডায়মন্ড জব্দ করে শুল্ক ও গোয়েন্দা তদন্ত অধিদফতর। এ ঘটনায় আপন জুয়েলার্স কর্তৃপক্ষকে তলব করে শুল্ক ও গোয়েন্দা বিভাগ।
বুধবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে শুল্ক গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদপ্তরের কার্যালয়ে যান আপন জুয়েলার্সের অন্যতম মালিক ও বনানী ধর্ষণ ঘটনার প্রধান আসামি সাফাত আহমেদের বাবা দিলদার আহমেদ। এসময় তার ভাই ও প্রতিষ্ঠানের অন্যতম দুই মালিক গুলজার আহমেদ এবং আজাদ আহমেদও উপস্থিত ছিলেন।
প্রায় ছয় ঘণ্টা জিজ্ঞাসাবাদ শেষে বিকাল ৫টার দিকে কার্যালয় থেকে বেরিয়ে যান তারা। এসময় ড. মইনুল খান সাংবাদিকদের জানান, সাময়িকভাবে জব্দকৃত স্বর্ণের বৈধ কাগজপত্র দেখাতে পারেনি আপন জুয়েলার্স কর্তৃপক্ষ।
তিনি বলেন, ‘তারা কিছু প্রশ্নের জবাব দিয়েছেন, কিন্তু বেশিরভাগেরই জবাব দিতে পারেননি। এমনকি প্রায় ৪৯৮ কেজি (সাড়ে ১৩ মণ) স্বর্ণের বৈধ কাগজপত্র দেখাতে পারেননি। স্বর্ণগুলো ওজন হিসাবে প্রায় সাড়ে ১৩ মণ এবং এগুলোর অর্থমূল্য প্রায় আড়াইশ কোটি টাকা।’
জুয়েলার্স কর্তৃপক্ষ বৈধ কাগজপত্র দেখানোর জন্য ১৫ দিন সময় চেয়েছেন জানিয়ে ড. মইনুল খান বলেন, ‘সার্বিক বিবেচনা করে তাদের ছয় দিন অর্থ্যাৎ ২৩ মে পর্যন্ত সময় দেয়া হয়েছে। ওই দিন সকল কাগজপত্র নিয়ে ফের তাদের কার্যালয়ে ডাকা হয়েছে। কাগজপত্র আনতে পারলে নিয়ম অনুযায়ী স্বর্ণ তাদের কাছে হস্তান্তর করা হবে। আর না আনতে পারলে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেয়া হবে।’
‘জব্দকৃত’ স্বর্ণের মধ্যে মেরামতের জন্য দেয়া গ্রাহকদের ১০ কেজি স্বর্ণ রয়েছে বলে দাবি করেছেন মালিকরা। তবে এসব স্বর্ণালঙ্কার গ্রাহকদের সরাসরি শুল্ক ও গোয়েন্দা কার্যালয় থেকেই সংগ্রহ করতে হবে বলে জানিয়েছেন ড. মইনুল খান।
তিনি বলেছেন, ‘বৃহস্পতিবার ব্যক্তিগতভাবে গ্রাহকদের কার্যালয়ে এসে ক্যাশ ম্যামোর মূলকপিসহ এনে ফটোকপি জমা দিয়ে যেতে হবে। এরপর ২২ মে দুপুর ২টা থেকে বিকেল ৫টার মধ্যে শুল্ক ও গোয়েন্দা কার্যালয় থেকে গ্রাহকদের স্বর্ণ ফেরত দেয়া হবে।’বেরিয়ে যাওয়ার সময় আপন জুয়েলার্সের মালিক দিলদার আহমেদ সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন। এসময় তিনি ‘সম্প্রতি ঘটে যাওয়া সব কিছুর জন্য’ সবার কাছে ক্ষমা চান।
উল্লেখ্য, গত ২৮ মার্চ বনানীর দ্য রেইনট্রি হোটেলে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের দুই শিক্ষার্থী ধর্ষণের শিকার হন। এ ঘটনায় ভুক্তভোগীরা পরবর্তীতে আপন জুয়েলার্সের মালিক দিলদার আহমেদের ছেলে সাফাত আহমেদ ও তার বন্ধু নাঈম আশরাফ ওরফে আব্দুল হালিমসহ পাঁচজনের বিরুদ্ধে মামলা করেন।
দেশজুড়ে তীব্র প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি করে এ ঘটনা। একই সঙ্গে আপন জুয়েলার্সের মালিক দিলদার আহমেদের অবৈধ সম্পদের বিষয়ে সংবাদমাধ্যমে একাধিক প্রতিবেদন প্রকাশিত হওয়ায় গত রোববার জুয়েলার্সটির ৫টি শাখায় তল্লাশি চালায় পুলিশ।
Leave a Reply