আনলিমিটেড নিউজ :: খুলনায় পেটে বাতাস ঢুকিয়ে চাঞ্চল্যকর শিশু রাকিব (১২) হত্যা মামলায় নিন্ম (বিচারিক) আদালতের দেয়া মৃত্যুদণ্ডে রায় কমিয়ে দুই আসামিকে দেওয়া যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের ঘোষণা করে দেয়া হাইকোর্টের পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশ করা হয়েছে।বিচারপতিদের স্বাক্ষর করার পর বুধবার ৩৯ পৃষ্ঠার এই পূর্ণাঙ্গ রায় সুপ্রিমকোর্টের ওয়েবসাইটে প্রকাশ করা হয়।
রায় প্রকাশের পর রাষ্ট্রপক্ষ জানিয়েছে, এখন হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে আপিল দায়ের করা হবে।
এরআগে রাকিব হত্যা মামলার প্রধান আসামি মো. শরীফ ও তার সহযোগী মিন্টুর মৃত্যুদণ্ডের সাজা কমিয়ে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের আদেশ দেন হাইকোর্ট। একইসঙ্গে দুই আসামিকে ৫০ হাজার টাকা করে জরিমানা, অনাদায়ে প্রত্যেকের আরও দুই বছর করে কারাদণ্ডের নির্দেশ দেয়া হয়। জরিমানার অর্থ রাকিবের পরিবারকে দিতে হবে।
রাকিব হত্যার ডেথ রেফারেন্স, আসামিদের জেল আপিল ও ফৌজদারি আপিল খারিজ করে এবং বিচারিক আদালতের রায় পরিমার্জন করে গত ৪ এপ্রিল হাইকোর্টের বিচারপতি জাহাঙ্গীর হোসেন ও বিচারপতি মো. জাহাঙ্গীর হোসেনের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ এ রায় দেন।
হাইকোর্টে ১১ কার্যদিবসের শুনানিতে রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল জহিরুল হক জহির, সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল আতিকুল হক সেলিম ও বিলকিস ফাতেমা। আসামিপক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী এএসএম আবদুল মুবিন ও গোলাম মো. চৌধুরী আলাল।
দেশের ইতিহাসে বিচারিক আদালতে স্বল্প সময়ে বিচার নিশ্চিত হওয়ার পর গত ১০ জানুয়ারি হাইকোর্টে শিশু রাকিব হত্যা মামলার ডেথ রেফারেন্স ও আপিল শুনানি শুরু হয়। শুনানি শেষে গত ২৯ মার্চ রায়ের এ দিন ধার্য করেন আদালত। পরে নির্ধারিত দিন ৪ এপ্রিল রায় ঘোষণা করা হয়।
২০১৫ সালের ১০ নভেম্বর রাকিব হত্যা মামলার রায়ের ডেথ রেফারেন্স হাইকোর্টে পাঠানো হয়। ডেথ রেফারেন্সের পাশাপাশি বিচারিক আদালতের ফাঁসির রায়ের বিরুদ্ধে আসামিরা হাইকোর্টে আপিল করেন। প্রধান বিচারপতির নির্দেশে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে এ মামলার পেপারবুক প্রস্তুত করা হয়। গত ১০ জানুয়ারি পেপারবুক থেকে পড়া শুরু হয়।
এর আগে একই বছরের ৮ নভেম্বর শিশু রাকিব হত্যার দায়ে প্রধান আসামি মো. শরীফ ও তার সহযোগী মিন্টুকে ফাঁসির আদেশ দেন আদালত।খুলনা মহানগর দায়রা জজ আদালতের ভারপ্রাপ্ত বিচারক দিলরুবা সুলতানা ওই রায় দিয়েছিলেন। সে সময় মামলার অপর আসামি শরীফের মা বিউটি বেগমকে খালাস দেন আদালত।
২০১৫ সালের ৩ আগস্ট বিকেলে খুলনার টুটপাড়ায় শরীফ মোটরস নামে এক মোটরসাইকেল গ্যারেজে পেটে বাতাস ঢুকিয়ে পৈশাচিক নির্যাতন করে রাকিবকে হত্যা করা হয়। পরদিন রাকিবের বাবা মো. নুরুল আলম বাদী হয়ে শরীফ, তার সহযোগী মিন্টু খান এবং শরীফের মা বিউটি বেগমের বিরুদ্ধে সদর থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।
Leave a Reply