আনলিমিটেড নিউজ, আন্তর্জাতিক ডেস্ক :: নব্য তুরস্কের ইতিহাসে দেশটির রাজনৈতিক পদ্ধতির সবচেয়ে বড় পরিবর্তনের লক্ষ্যে আয়োজিত গণভোটে ভোট গ্রহণ শুরু হয়েছে। রোববারের এই গণভোটে ‘হ্যাঁ’ জয়যুক্ত হলে সংসদীয় গণতন্ত্র থেকে দেশটি প্রেসিডেন্ট শাসিত গণতান্ত্রিক দেশে পরিণত হবে।
এতে দেশটির বর্তমান প্রেসিডেন্ট রিজেপ তায়িপ এরদোয়ান প্রভূত ক্ষমতার অধিকারী হবেন এবং তাকে ২০১৯ সাল পর্যন্ত দেশটির ক্ষমতায় দেখা যেতে পারে বলে ধারণা করছেন পর্যবেক্ষকরা। মতামত জরিপে দেখা গেছে, অল্প ভোটে ব্যবধানে ‘হ্যাঁ’ জয়যুক্ত হবে। দেশজুড়ে এক লাখ ৬৭ হাজার ১৪০টি ভোট কেন্দ্রে পাঁচ কোটি ৫০ লাখ ভোটার নিজেদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে পারবেন।
দেশটির পূর্বাঞ্চলে স্থানীয় সময় সকাল ৭টায় ভোট গ্রহণ শুরু হয়, দেশের বাদবাকী অংশে স্থানীয় সময় সকাল ৮টা থেকে ভোট গ্রহণ শুরু হয়। উভয় জায়গায় বিকাল ৫টায় ভোট গ্রহণ শেষ হবে। দেশটির প্রবাসী নাগরিকদের ভোট ইতোমধ্যেই গ্রহণ করা হয়েছে।
দেশটির দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলের সবচেয়ে বড় শহর দিয়ারবাকিরে ভোট দিয়ে কেন্দ্র থেকে বের হয়ে আসা হাসান সেলিক (২৯) বলেন, “এক ব্যক্তির শাসন শুরু হবে, তাই আমি ‘না’ বলে এসেছি। শক্তিশালী একটি পার্লামেন্টের জন্য আমি ‘না’ বলেছি।”
এই গণভোটকে কেন্দ্র করে দেশটির মানুষ দুইভাগে বিভক্ত হয়ে পড়েছে। এরদোয়ান ও তার সমর্থকরা বলছে, চলতি সংবিধান আরো উন্নত করার জন্য এই পরিবর্তন জরুরি। অপরদিকে বিরোধীরা বলছে, এই পদক্ষেপ দেশকে স্বৈরতন্ত্রের দিকে নিয়ে যাবে।
‘হ্যাঁ’ জয়ী হলে ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) সঙ্গে তুরস্কের সম্পর্ক আরো ক্ষতিগ্রস্ত হবে। ইইউয়ের সঙ্গে এক চুক্তির পর তুরস্ক সিরিয়া ও ইরাক থেকে ইউরোপ অভিমুখি অভিবাসন প্রত্যাশীদের স্রোতের লাগাম টেনে ধরে। সম্প্রতি গণভোটের প্রচারণা নিয়ে ইউরোপের কয়েকটি দেশের সঙ্গে কূটনৈতিক সম্পর্ক নাজুক হওয়ার পর ওই চুক্তি পুনর্বিবেচনার হুমকি দিয়েছেন প্রেসিডেন্ট এরদোয়ান। ধারণা করা হচ্ছে, গণভোটে জয়ী হলে তিনি ওই হুমকি বাস্তবায়ন করতে পারেন।
গত বছরের জুলাইয়ে এক ব্যর্থ অভ্যুত্থানের পর থেকে এ পর্যন্ত দেশটিতে প্রায় ৪০ হাজার ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করা হয় এবং এক লাখ ২০ হাজার ব্যক্তিকে চাকরিচ্যুত করা হয়। এরদোয়ান সরকারের এই দমননীতির কড়া সমালোচনা করেছে পশ্চিমা দেশগুলো ও অধিকার গোষ্ঠীগুলো।
ভোটের আগের দিন শনিবার রাতে দেশটির দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলে ক্ষমতাসীন একে পার্টির জেলা পর্যায়ের এক নেতার গাড়িতে হামলা চালিয়ে কুর্দি বিদ্রোহীরা তার এক দেহরক্ষীকে হত্যা করেছে বলে জানিয়েছে নিরাপত্তা বাহিনী। এই হামলায় অপর এক রক্ষী আহত হয়েছেন।
এছাড়া ভোটের আগে দেশটির আর কোথাও কোনো সহিংসতা হয়েছে বলে খবর পাওয়া যায়নি।
Leave a Reply